মোঃ আবদুল্লাহ আল নোমান,কলাপাড়া
পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরের পূর্বদিকে নয় নম্বর ওয়ার্ডের পাশ দিয়ে প্রবাহিত বাদুরদলীর ফ্লইস খালটি পৌর শহর ছাড়াও বাদুরতলী ও মধ্যটিয়াখালী গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালটি বাদুরতলী পয়েন্টে একটি ফ্লুইস গেটের মাধ্যমে পানি ওঠানামার কাজে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু অতীতে খালটির মাঝখানে কয়েকটি বাঁধ দেওয়ায় পানির প্রবাহ কমে গেছে এবং দুই পাড়ে পলি পড়ে কিছুটা ভরাট হয়ে গেছে।
এছাড়াও, কিছু সমাজবিরোধী ব্যক্তি মাটি ফেলে খালটি ভরাট করে একের পর এক স্থাপনা নির্মাণ করেছে, যা দখল প্রক্রিয়াকে চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে। সবশেষে, বিগত সরকারের আমলে ২০০ ফুট প্রস্থের খালটির পানির প্রবাহ বন্ধ করে দুই পাশে বাঁধ দিয়ে মাত্র ৩০-৩৫ ফুট প্রস্থের একটি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে, যা স্থানীয়দের মতে সরকারি অর্থায়নে খাল ধ্বংসের প্রকল্প। এভাবে খালটির পানি চলাচলের পথ আটকে দেওয়া হয়েছে, এবং মাছ ধরার একটি প্রভাবশালী মহল কালভার্টের নিচেও মাটি ভরাট করে দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শিক্ষক ফোরকানুল ইসলাম সিকদার জানান, খালের প্রস্থ অনুযায়ী একটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করলে পানি চলাচলে সমস্যা হতো না। স্থানীয় সচেতন মানুষের মন্তব্য, যারা রক্ষক, তারাই যদি ভক্ষকের কাজ করেন, তাহলে পরিবেশ-প্রতিবেশ টিকবে না।
একইভাবে, কলাপাড়া পৌর শহরের চিঙ্গুরিয়া এলাকায় খালের এক-তৃতীয়াংশ দখল করে গোরস্থানের দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছে, যা জোয়ারের সময় পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে এবং খালটি মৃতপ্রায় অবস্থায় পরিণত হয়েছে। পরিবেশ কর্মী নজরুল ইসলাম জানান, বিগত সরকারের সময় পৌরবাসীর মতামত উপেক্ষা করে জনস্বার্থবিরোধী বেশ কিছু প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, যা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি।
কুয়াকাটা পৌরসভার ভবনের পাশ দিয়ে প্রবাহিত কচ্ছপখালী-নবীনপুর খালের পাড় দখল করে দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। যদি এই খালটির পানির প্রবাহ না থাকে, তাহলে পৌরবাসীর জলাবদ্ধতা নিরসনের পথ বন্ধ হয়ে যাবে। পরিবেশ কর্মী কেএম বাচ্চু জানান, খালটির দখল-দূষণ বন্ধে যাদের প্রধান দায়িত্ব, তারাই পরিবেশের সর্বনাশ করেছে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল ইসলাম জানান, খালের দখল-দূষণ রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গত এক বছরে কলাপাড়ায় অন্তত ১২টি খালের প্রায় ৬০টি বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। খালের মাটি কাটাসহ দখল বন্ধে মোবাইল কোর্ট চলমান রয়েছে। এছাড়া, কলাপাড়া-কুয়াকাটা পৌরসভার খালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।