1. khairunnahar311984@gmail.com : কলাপাড়া পোস্ট :
  2. necharlenovo@gmail.com : Nechar Uddin : Nechar Uddin
  3. mdabdullahalnoman819@gmail.com : MD. ABDULLAH AL NOMAN : MD. ABDULLAH AL NOMAN
জুড়ীতে শাহাব-মাছুম সিন্ডিকেটের শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ
শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ০৩:১৮ অপরাহ্ন

জুড়ীতে শাহাব-মাছুম সিন্ডিকেটের শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ রবিবার, ৪ মে, ২০২৫
  • ৭৩ জন দেখেছেন

বিশেষ প্রতিনিধিঃ

মৌলভীবাজারের জুড়ীতে ৫ আগস্টের পর দিনরাত বিদ্যুৎ গতিতে চলমান শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নির্মাণকাজে ব্যবহার হচ্ছে নিম্নমানের পাথর, বালি ও রড। এছাড়া পাথর ও বালির মিশ্রণেও রয়েছে অনিয়ম। সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন ও জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাছুম রেজা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নির্মাণ সামগ্রী ক্রয় করছেন ঠিকাদার। এই প্রভাবশালী সিন্ডিকেট জমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে ধাপে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করে আসছে।

জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে সারাদেশে “শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম” নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রকল্পের (২য় পর্যায়) আওতায় জুড়ীতে মোট ৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এ নির্মাণকাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাহবুব এন্টারপ্রাইজ। যা বাস্তবায়নে রয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।

জুড়ীতে “শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম” নির্মাণ কাজের প্রথম থেকেই বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। প্রথম ধাপে জমি অধিগ্রহণের নামে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন শাহাব-মাছুম সিন্ডিকেট। উপজেলা শহরে এবং শহরের পাশে স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য ভালো ভালো জায়গা থাকা সত্ত্বেও শাহাব-মাছুম সিন্ডিকেট অধিক মুনাফার আশায় শহরের বাহিরে আঞ্জুরি কোনা বিলে এই স্টেডিয়াম নির্মাণের উদ্যোগ নেন। আঞ্জুরি কোনা বিলে এই স্টেডিয়াম নির্মাণ হলে বছরের অর্ধেক সময় পানির নিচে থাকবে উল্লেখ করে
প্রথমদিকে সাবেক পরিবেশ মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন রাজি না হলেও সিন্ডিকেট নেতা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুমের অনুরোধে এবং পার্সেন্টেজ বাড়ানোর প্রত্যাশা পেয়ে মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন রাজি হন। এতে করে কোটি কোটি টাকা বাণিজ্য করে নেন এই সিন্ডিকেট। পরবর্তীতে স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে শাহাব-মাছুম সিন্ডিকেট দুই কোটি টাকা চাঁদা নেন এবং সিন্ডিকেটের সদস্যদের মাধ্যমে স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজের মালামাল সাপ্লাই দিতে থাকেন। নিম্নমানের মালামাল সাপ্লাই দিয়ে সিন্ডিকেটের সদস্যরাও পকেট ভারি করেন।

এদিকে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজের দেখভালের ধারে কাছেও নেই প্রশাসনের কেউ। আর এই সুযোগে ব্যাপক অনিয়ম করে যাচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তথা শাহাব-মাছুম সিন্ডিকেট। ২০২৩ সালের ৬ জুলাই কাজ শুরু করে ৯ মাস মেয়াদে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও অর্ধেক কাজও শেষ হয়নি মেয়াদকালে। তবে ৫ আগস্টের পর বিদ্যুৎ গতিতে চলছে “শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম” নির্মাণ কাজ ! আর এই বিদ্যুৎ গতির কাজের পিছনে রয়েছেন সিন্ডিকেট নেতা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম রেজা।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নির্মাণাধীন শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের অফিস ভবন, সাধারণ ও ভিআইপি গ্যালারি এবং সিঁড়িতে বালু সিমেন্ট পাথরের যে ঢালাই দেয়া হয়েছে তা অত্যন্ত নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। নির্মাণাধীন গ্যালারির বিভিন্ন স্থানে ঢালাই কাজে সিমেন্টের পরিমাণ কম দেওয়ায় এখন হাত দিয়ে ধরলেই ঝর ঝর করে খসে পড়ার উপক্রম। এছাড়াও নিম্নমানের বালু না পরিষ্কার করে কাজের জন্য ব্যবহার করছে শ্রমিকরা। নির্মাণ কাজের জন্য মাঠের সামনে ফেলে রাখা হয়েছে লোহার রোড। যেই রডের গায়ে কোন কোম্পানির নাম লেখা নেই। পুরাতন রড গুলো মরিচা ধরে বিভিন্ন স্থান থেকে চিকন হয়ে গেছে। অধিকাংশ রড গুলোই ক্ষয়ে ক্ষয়ে গেছে মরিচা ধরে। আবার বিভিন্ন স্থানে পানির মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছে রডের তৈরি রিং যা মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই রড ব্যবহার করলে স্টেডিয়ামের স্থায়িত্ব থাকবে না। কয়েক বছর গেলেই গ্যালারি গুলো ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজের তদারকিতে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইদুল ও সাগর বলেন, আমরা মূর্খ মানুষ লেখাপড়া জানিনা আমাদেরকে যেভাবে বলা হয়েছে আমরা সেভাবেই কাজ করছি। সরকারি একটা চলমান কাজে কোন প্রকৌশলী উপস্থিত নেই কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, সরকারি এবং আমাদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রকৌশলী নিয়োগ করা আছেন তারা এই কাজের তদারকি করছেন। এখন তারা বাহিরে আছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, তার ছেলে জুমন ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাছুম রেজা স্বল্প মূল্যের জমি ক্রয় করে অধিক মূল্য দেখিয়ে স্টেডিয়ামের জন্য জমি অধিগ্রহণ করে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। শাহাব-মাছুম সিন্ডিকেট স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেও হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।

এছাড়াও যে সমস্ত পাথর স্তূপ রাখা হয়েছে, তা ব্যবহারে অযোগ্য। ২.৫ এফএম বালি ব্যবহার করার নির্দেশনা থাকলেও লোকাল বালি ব্যবহার করা হচ্ছে। আবার সেটাও করা হচ্ছে না সঠিক পরিমাপে। লোকাল বালির সঙ্গে সিমেন্ট ও পাথর ব্যবহার করে নির্মাণ কাজ করে আসছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আবার রডের ব্যবহার হচ্ছে নিম্নমানের। এর পরিমাপও সঠিক নয়। বালি পাথর ওয়াশ করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। ব্যবহৃত হচ্ছে ধুলা ময়লা মিশ্রিত পাথর বালি। আমরা এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কোনো কর্ণপাত করছে না। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলছেন শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজে কোন নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি। এমনকি কাজেও কোন অনিয়ম হয়নি।

এবিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ ইসরাইল হোসেন জানান, স্টেডিয়াম নির্মাণে কোনো দুর্নীতি সহ্য করা হবে না। সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করলে তা বন্ধ করে দেয়া হবে।

আপনার সোসাল একাউন্টে শেয়ার করে অন্যদের পড়ার সুযোগ করে দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
Developed by ITNexBD