শফিউর রহমান ফারাবী, বাংলাদেশের অনলাইন মতাদর্শিক পরিমণ্ডলে এক সাহসী, কড়া ও আপসহীন ইসলামী কণ্ঠস্বর। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কালাইশ্রীপাড়ায় জন্ম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান শিক্ষার পাট চুকিয়ে ফারাবী পরিণত হন একজন পরিপূর্ণ আদর্শবাদী মুসলিম যুবক, যিনি ইসলামের রক্ষণ, শরিয়াহর বাস্তবায়ন ও ধর্মীয় সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার কাজে নিরবচ্ছিন্নভাবে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন।
তিনি শুধুমাত্র অনলাইনে নয়, বরং তরুণদের মাঝে ইসলামী আত্মপরিচয়, শালীনতা ও কুরআন-সুন্নাহভিত্তিক সমাজ গঠনের চিন্তা ছড়িয়ে দেন। তার পোস্ট, বক্তৃতা ও লেখালেখি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে জাগরণ সৃষ্টি করে, বিশেষ করে যারা নাস্তিকতা ও ধর্মনিরপেক্ষ আগ্রাসনে হতাশ ছিল।
২০১৩ সালে শাহাবাগের তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চে নাস্তিক ও ইসলামবিদ্বেষী চেতনার নগ্ন উন্মোচনের সময়, ফারাবী ছিলেন একমাত্র কণ্ঠস্বর যিনি সাহসিকতার সঙ্গে প্রকাশ্যেই তা প্রতিহত করেন। শাহাবাগ আন্দোলনের নামে ইসলাম ও নবী (সাঃ)-কে অবমাননা চলছিল যখন, তখন ফারাবী ছিলেন একমাত্র ব্যক্তি যিনি প্রকাশ্যে এই ধর্মবিরোধী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় মূল্যবোধকে রক্ষা করতে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
তিনি লিখেছেন, বলেছেন, এবং মুসলিম তরুণদেরকে জাগিয়েছেন। এই অবস্থান ছিল স্পষ্ট, জোরালো ও আপসহীন। এবং এখানেই ‘ফেসিবাদি’ রাষ্ট্রক্ষমতা তাকে টার্গেট করে।
সরকার ও তৎকালীন প্রশাসন, যারা ইসলামবিরোধী প্রগতিশীলতার নামে ধর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল, তারা কৌশলে ফারাবীর বিরুদ্ধে “উসকানিমূলক বক্তব্য”-এর অভিযোগ দাঁড় করিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
এটি ছিল পরিকল্পিত এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণ একটি অভিযান, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল একটি অপ্রতিরোধ্য ধর্মীয় কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করে দেওয়া।
ফারাবীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগগুলো ছিল ধোঁয়াশাপূর্ণ, অস্পষ্ট ও পক্ষপাতদুষ্ট।
প্রশাসন ও মূলধারার মিডিয়া একত্রে ইসলামি মূল্যবোধের পক্ষে অবস্থান নেওয়া একজন আদর্শিক যুবকের ভাবমূর্তি নষ্ট করার ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে।
তবে তা সত্ত্বেও, ফারাবীর অবস্থান চূড়ান্তভাবে অটল থেকে যায়।
তিনি কারাবন্দী থেকেও তরুণ প্রজন্মের মাঝে ইসলামী বোধ, আদর্শিক অবস্থান ও আত্মমর্যাদার চেতনা ছড়িয়ে দিতে পিছপা হননি।
তার লেখনী ও চিন্তার ধারা দেশের বহু তরুণকে দ্বীন ও দাওয়াহর পথে পরিচালিত করেছে।
ফারাবীর ব্লগগুলো পড়ে যুবকরা বলেন, তিনি মতপ্রকাশের অধিকার ও ইসলামী আদর্শিক মুক্তির পক্ষে যিনি জীবন বাজি রেখে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তারা তাকে দেখেন একজন আদর্শিক ‘শহীদে ফিকরি’ রূপে, যিনি রাষ্ট্রযন্ত্র ও কুচক্রী ইসলামবিরোধী প্রপাগান্ডার মুখেও সত্য ও দ্বীনের পক্ষে আপসহীন লড়াই চালিয়ে গেছেন।
আজও, শফিউর রহমান ফারাবী শুধুমাত্র একটি নাম নয়, বরং একটি প্রতিরোধের প্রতীক- একটি আদর্শিক আন্দোলনের শিখা, যা ফেসিবাদ, ইসলামবিদ্বেষ ও চিন্তার দমননীতির বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছে।
তাঁর অবস্থান, তাঁকে থামিয়ে দেওয়ার শত প্রচেষ্টার মাঝেও, দিনে দিনে আরও বেশি মানুষের অন্তরে জায়গা করে নিচ্ছে।
মুহাম্মাদ নেছার
Writer, Activist, Independent Journalist