ঢাকার পল্টন থানায় দায়ের হওয়া হত্যা চেষ্টার মামলায় শতাধিক ব্যক্তির নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যার মধ্যে রয়েছেন বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, এবং পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক গোলাম রাব্বি খান। মামলাটি থেকে অব্যাহতি পাওয়ার উদ্দেশ্যে চম্পাপুর ইউনিয়ন বিএনপির প্যাডে তৈরি করা একটি প্রত্যয়নপত্র সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে ১২ জনকে বিএনপির সক্রিয় কর্মী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
চমকপ্রদভাবে, সেই তালিকায় ৫ নম্বরে থাকা গোলাম রাব্বি খান নিজে ছাত্রলীগ নেতা হলেও তাকে বিএনপির কর্মী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনার ঝড়। অনেকেই এটিকে রাজনৈতিক বিভ্রান্তি ও দ্বিচারিতা হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন।
সূত্র মতে, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টন এলাকায় সংঘটিত একটি হত্যাচেষ্টার অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২৫ সালের ৮ মে মামলা করেন পটুয়াখালীর মহিপুর ইউনিয়নের মোয়াজ্জেমপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. বেল্লাল। মামলায় মোট ১২৩ জনকে আসামি করা হয়, যার মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা রাব্বি খান ১১৯ নম্বর আসামি।
মামলা থেকে মুক্তি পেতে ২০২৫ সালের ১২ জুন চম্পাপুর ইউনিয়ন বিএনপির প্যাডে একটি সুপারিশপত্র তৈরি করা হয়। সেখানে বলা হয়, ওই তালিকাভুক্ত ১২ জন বিএনপির সক্রিয় কর্মী। কিন্তু তালিকায় ছাত্রলীগ নেতা রাব্বির নাম থাকায় তৈরি হয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও বিভ্রান্তি।
এদিকে চম্পাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. মাসুম বিল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান মিলন দাবি করেছেন, তাদের স্বাক্ষর ছাড়া এই প্যাড ও সুপারিশপত্র তৈরি করা হয়েছে, যা ভুয়া। তারা জানান, মামলার তালিকায় বিএনপির নিরীহ লোকজনও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যা তারা সমর্থন করেন না। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং বাদীর সঙ্গেও কথা হয়েছে বলে তারা দাবি করেন।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম নিয়েছে। একদিকে একই তালিকায় দুই বিপরীতমুখী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, অন্যদিকে ভুয়া সুপারিশপত্রের অভিযোগ—সবমিলিয়ে এটি এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।