কলাপাড়া পৌর শহর বর্তমানে এক ভয়াবহ অচলাবস্থার মুখোমুখি। শৃঙ্খলার অভাব, প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা আর বেপরোয়া যানবাহনের দখলে চলে যাচ্ছে এই ছোট অথচ গুরুত্বপূর্ণ উপকূলীয় শহরটি। আর এই বিশৃঙ্খলার কেন্দ্রে রয়েছে একটি নাম—ট্রলি।
ট্রলি, যা মূলত পণ্য পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হয়, এখন শহরের অভ্যন্তরে যেন রীতিমতো দখলদার বাহিনী হয়ে উঠেছে। পৌরসভার পক্ষ থেকে শহরে ট্রলি চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য গেট বসানো হয়েছে, কিন্তু তা শুধু দেখার জন্যই আছে। দিনের বেলায়ও ট্রলি অবাধে শহরের ভেতর প্রবেশ করে, নিয়ম-কানুন, নিরাপত্তা বা জনদুর্ভোগ কোনো কিছুই যেন তাদের থামাতে পারে না।
শহরের প্রধান সড়কগুলোতে প্রতিদিন ঘটে যানজট, যার কারণে স্কুলগামী শিশু, হাসপাতালমুখী রোগী, কর্মজীবী মানুষ ও বাজারমুখী নাগরিক সবাই দুর্ভোগে পড়ছেন। ট্রলি রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে মালামাল ওঠানামা করে, ফলে অন্য যানবাহন এক ইঞ্চিও নড়তে পারে না। নিয়ন্ত্রণ গেটের দায়িত্বে থাকা লোকজনদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তারা কি নিজের দায়িত্ব পালন করছেন, নাকি অন্য কোনো প্রভাবের কাছে নত হয়ে আছেন?
আমি “আমরা কলাপাড়াবাসী” সংগঠনের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, শহরের ভিতরে ট্রলি চলাচল এখন শুধু একটি যানবাহনের সমস্যা নয়, এটি একটি জননিরাপত্তা, পরিবেশ ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার সংকট। শহরের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে, আর মানুষের মনে ক্ষোভ জমছে।
এখনই সময়—
ট্রলির জন্য শহরের বাইরে বিকল্প রুট নির্ধারণ করা।
নিয়ন্ত্রণ গেটকে কার্যকরভাবে পরিচালনা করা। পৌরসভার পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযান ও জরিমানা চালু করা।
নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে একটি স্থায়ী সমাধানের রোডম্যাপ তৈরি করা।
শহরের আইন থাকলেই হবে না, তার বাস্তব প্রয়োগ না থাকলে এই শহরের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা দুটোই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে। পৌর কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব—সবার দায়িত্বশীল ভূমিকা এখন জরুরি।
আমরা চাই না কলাপাড়া শহর শুধু পরিকল্পনার খাতায় থেকে যাক, আমরা চাই বাস্তব পরিবর্তন। আমরা কলাপাড়াবাসী, আমরা চাই নিয়ম ও নিরাপত্তায় চলে আমাদের শহর।