1. ueattupa@aurevoirmail.com : NAEWTRER168495NERTYTRY :
  2. wjvjyekk@bonsoirmail.com : NARETGR817617NERTHRTYHR :
  3. akmnazmuzsakib@gmail.com : Nazmus Sakib : Nazmus Sakib
  4. khairunnahar311984@gmail.com : কলাপাড়া পোস্ট :
  5. necharlenovo@gmail.com : Nechar Uddin : Nechar Uddin
  6. mdabdullahalnoman819@gmail.com : MD. ABDULLAH AL NOMAN : MD. ABDULLAH AL NOMAN
স্বপ্নের ঠিকানা এখন দুঃস্বপ্ন: ঘর, পানি ও স্বাস্থ্য-সবই অনিশ্চয়তায়
বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:১৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মহিপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদ রিপন, সম্পাদক হাফিজুর রহমান কলাপাড়ায় জেলে হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার দেশীয় প্রজাতির মাছের জন্য শঙ্কা: চায়না বুচনা জাল ধ্বংস করছে মাছের প্রজনন। কলাপাড়ায় এনসিপি’র আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সংস্কৃতির মেলবন্ধন গ্রামীণ ঐতিহ্য আজ সংকটে কলাপাড়ায় আন্তর্জাতিক নির্মল বায়ু দিবস পালিত পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র: G7 দেশগুলোর ২০৩৫ সালের মধ্যে কয়লা বিদ্যুৎ বন্ধ ঘোষণা, বাংলাদেশে ঝুঁকির প্রকল্প চালু কলাপাড়ায় মাদক সেবনের দায়ে আরো চার জনের ১৪ দিনের কারাদন্ড  মেয়েরা কখন এবং কেন রাগ করে? স্বপ্নের ঠিকানা এখন দুঃস্বপ্ন: ঘর, পানি ও স্বাস্থ্য-সবই অনিশ্চয়তায়

স্বপ্নের ঠিকানা এখন দুঃস্বপ্ন: ঘর, পানি ও স্বাস্থ্য-সবই অনিশ্চয়তায়

নাজমুস সাকিব
  • প্রকাশিত সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৭৬ জন দেখেছেন

নাজমুস সাকিব, কলাপাড়া

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের দুই মৌজার প্রায় ১৬ একর জমিতে নির্মিত পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পুনর্বাসন পল্লী ‘স্বপ্নের ঠিকানা’। জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত ১৩০ পরিবারের জন্য করা হয়েছিল এই পুনর্বাসন আবাসন। কিন্তু নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার প্রায় সাত বছর পার হলেও পুনর্বাসিত পরিবারগুলো এখনো মালিকানার দলিল হাতে পাননি। ফলে প্রতিশ্রুত স্বপ্ন এখন পরিণত হয়েছে দুঃস্বপ্নে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পুনর্বাসন পল্লীর অনেক ঘর তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। প্রায় ৮০ পরিবার কর্মসংস্থানের খোঁজে এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। কেউ কেউ ঘর ভাড়া দিয়েছেন। যারা রয়ে গেছেন, তাদের অধিকাংশই মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। ঘরের ছাদ দিয়ে পানি পড়ে, দেয়াল ও সিঁড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফ্লোরে বালু উঠে যাচ্ছে, প্লাস্টার হাত দিলেই খসে পড়ে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির সময় হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে যায়। ৪৮টি নলকূপ বসানোর কথা থাকলেও বসানো হয়েছে ৩৯টি, যার অধিকাংশই অকেজো। শুকনো মৌসুমে ভয়াবহ পানি সংকট দেখা দেয়।
এলাকায় সারাবছর মশার উপদ্রব বিরাজ করছে।

স্বপ্নের ঠিকানায় বসবাসরত পরিবারগুলো এখন মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় প্রতিটি ঘরেই অন্তত একজন করে মানুষ কোনো না কোনো রোগে আক্রান্ত। বিশুদ্ধ পানির অভাব, ড্রেনেজ সমস্যার কারণে নোংরা পরিবেশ ও মশার উপদ্রবের ফলে অনেকেই ডায়রিয়া, চর্মরোগ, শ্বাসকষ্ট ও উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।

২০১৫ সালে জমি হারানো কৃষক-জেলেরা জানান, তাঁদের সাজানো গেরস্ত ঘরবাড়ি, ফসলের জমি, মাছের ঘের ও গবাদিপশু ছিল। বছরে লাখ লাখ টাকা আয় করতেন। জমি অধিগ্রহণের সময় প্রতি শতক জমির মূল্য ধরা হয়েছিল ৫৬০০-৫৮০০ টাকা, অথচ বাজারদর ছিল অন্তত ২০ হাজার টাকা। এখন এক শতক জমি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ হাজার টাকায়। বি-১৮ ঘরের পুনর্বাসিত জামাল মৃধা বলেন- আমাদের আট একর কৃষিজমি ছিল। চাষাবাদ, মাছ চাষ, গবাদিপশু পালন করে বছরে ৮-৯ লাখ টাকা আয় হতো। জমি নেওয়ার সময় বলা হয়েছিল ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মসংস্থান হবে। কিন্তু ১০ বছর ধরে বেকারত্বে দিন কাটাচ্ছি। আমার এমএ পাস ছেলে এখনো বেকার। দলিলও হাতে পাইনি।

বাসিন্দাদের দাবি- ১. মালিকানার দলিল দ্রুত হস্তান্তর করতে হবে। ২. ঘরগুলো সংস্কার করতে হবে। ৩. পানির স্থায়ী সমাধান ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। ৪. প্রতি পরিবার থেকে একজনকে বিদ্যুৎকেন্দ্রে চাকরি দিতে হবে। ৫. ঘর প্রতি অন্তত ২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ বিল মওকুফ করতে হবে। ৬. এলাকায় স্থায়ী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে।

গত ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ কলাপাড়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বপ্নের ঠিকানা পুনর্বাসন পল্লীর সভাপতি নিপুল বলেন- হয়তো কিছুদিনের ভেতরেই আমাদের দলিলপত্র বুঝিয়ে দেবে কর্তৃপক্ষ। আমরা আশা করছি, বহু প্রতীক্ষিত এই সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে।

২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর রাষ্ট্রীয় আয়োজনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্নের ঠিকানা পুনর্বাসন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন। সেই সময় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ, আধুনিক পুনর্বাসন সুবিধা ও কর্মসংস্থানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আজও বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপ-মহাব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ ও প্রশাসন) মো: শহীদ উল্ল্যাহ ভূঁইয়া বলেন-স্বপ্নের ঠিকানা আবাসনটি নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির পুনর্বাসন প্রকল্প। জমির শ্রেণি পরিবর্তনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেওয়া হয়েছে। একটি কমিটির মাধ্যমে ১৩০ পরিবারের কাছে দলিল বুঝিয়ে দেওয়ার কাজ চলছে। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষ করে দ্রুত দলিল হস্তান্তর করা হবে। এছাড়া অন্যান্য সমস্যা সমাধানে নিয়মিত আলোচনা চলছে।

স্বপ্নের ঠিকানায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জীবনযাত্রা এখনো চরম স্বাস্থ্যঝুঁকি, কর্মসংস্থানহীনতা ও অনিশ্চয়তায় ঘেরা। সংবাদ সম্মেলনে পাওয়া আশ্বাস হয়তো তাদের মনে নতুন আশা জাগিয়েছে। তবে মানুষ চায়-প্রতিশ্রুত দলিল, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা ও মৌলিক সুবিধা যেন আর বিলম্ব না করে বাস্তবায়ন করা হয়।

আপনার সোসাল একাউন্টে শেয়ার করে অন্যদের পড়ার সুযোগ করে দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
Powered by ITNexBD