মোঃ আবদুল্লাহ আল নোমান
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার হিন্দু অধ্যুষিত আমিরাবাদ গ্রামের জনগণের ব্যবহৃত খাস পুকুর মাছ চাষের নামে সরকারিভাবে ইজারা দেওয়ার কার্যক্রম বাতিলের দাবিতে গ্রামের নারী-পুরুষ মানববন্ধন করেছেন। বুধবার (২৩ এপ্রিল) বেলা ১১ টায় কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক পরিবারের নারী পুরুষ অংশ নেন। এসময় বক্তব্য রাখেন,গৌরি রাণী, নন্দ কুমার সাহা, সঞ্জীব কুমার হাওলাদার, খুকুমণি হাওলাদার, উর্মি হাওলাদার, শোভা রানী হাওলাদার প্রমুখ । তারা বলেন, জগৎ মেম্বার বাড়ির সামনের এই পুকুরটির সম্মুখ অংশে অসংখ্য হিন্দু পরিবার শত বছর ধরে বংশ পরম্পরায় বসবাস করে আসছি। আশপাশের খালবিলের পানি লোনা থাকায় আমিরাবাদ গ্রামের লোকজন পুকুরের পানি রান্নাসহ দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করি। পুকুরের পাড়ে এলাকার সনাতন ধর্মীয় গৌড় গোবিন্দ সেবাশ্রম (মন্দির) রয়েছে। পূজা পার্বণের অনুষ্ঠানে সনাতন ধর্মাবলম্বী বহুলোকের সমাগম ঘটে। আগত ভক্তরা পুকুরের পানি ব্যবহার করেন। শতবর্ষী পুরনো পুকুরটির পানি এভাবেই সুদীর্ঘকাল পূজারীগণ, সংলগ্ন বাজারের দোকানদারগণসহ গ্রামবাসী ব্যবহার করে আসছেন।
বয়োবৃদ্ধা পুষ্পরাণী জানান, ওই পুকুর পাড়ে আমার স্বামীসহ তিন পুরুষের সমাধিস্থল (মঠ) রয়েছে।
ইতিপূর্বে কখনো এ পুকুর ইজারা দেওয়া হয়নি। এবারে এই প্রথম ইজারা দেওয়ার কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। পুকুরটি ইজারা দেওয়া হলে ব্যবহারের পানি অনুপযোগী হয়ে পড়বে। হিন্দু পরিবারের চলাচলের পথ অবরুদ্ধ হয়ে যাবে। এ পুকুরটির সামাজিক গুরুত্ব অপরিসীম। মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারীরা জানান, গ্রামের মানুষের ব্যক্তি,পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের কথা বিবেচনা করে উক্ত পুকুরের ইজারা প্রক্রিয়া বাতিল করা হোক। নাহলে তাদের অপুরনীয় ক্ষতি হবে বলে জানান।
পুষ্প রাণী জানান, তারা পুকুরের ইজারা প্রক্রিয়া বাতিলের দাবিতে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক, কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার ভূমি বরাবরে লিখিত আবেদন দিয়েছেন। বর্তমানে হিন্দু অধ্যুষিত আমিরাবাদ গ্রামের লোকজন পুকুরের ইজারা দেওয়ার কার্যক্রমের খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা পুকুর টি ইজারা না দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইয়াসীন সাদেক জানান, বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে আলোচনা করে তাদের নির্দেশনা নিয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে সরকারি বিধি মোতাবেক খাস পুকুর ইজারা দেওয়ার কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।