৪০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে রাস্তা হোক—আপত্তি নেই।
কিন্তু তার আগে আমাদের ১,০০০ কোটি টাকা চাই।
এই বাজেটেই চাই একটি বিশেষ বরাদ্দ—কলাপাড়ার তরুণদের কর্মসংস্থানের জন্য।
জলবায়ু সংকটে পড়তে যাওয়া বাংলাদেশের উপকূলীয় বন্দর নগরী কলাপাড়ার জন্য ১,০০০ কোটি টাকার বিশেষ কর্মসংস্থান বাজেট বরাদ্দে আসুন আওয়াজ তুলি।
আসুন আমরা স্বার্থপর হতে শিখি।
বিশ্বাস করুন—কলাপাড়ার তরুণ-তরুণীরা মোটেও স্বার্থপর নয়।
তারা নিজেদের জন্য চাইতে জানে না। এমনকি কী তাদের ভালো, কী মন্দ, সেটা নিয়েও ভাবতে রাজি নয়। তারা সারাক্ষণ “এলাকার উন্নয়ন” নিয়ে কথা বলে, কিন্তু সেই উন্নয়ন তাদের জীবনকে কীভাবে সুন্দর করবে—সেটা তারা ভাবে না।
যেমন ধরুন, আজ সারাদিনে অনেকে ফেসবুকে ভাঙ্গা থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত চার লেনের রাস্তা তৈরির পক্ষে পোস্ট দিয়েছে। তারা এটিকে “এলাকার গর্ব” হিসেবে দেখছে—এতে আপত্তি নেই।
কিন্তু এই রাস্তা হলে কলাপাড়ার ৫০ হাজার তরুণবয়সী বেকারের কী উপকার হবে—সেই প্রশ্ন কেউ তোলে না।
কলাপাড়ায় তরুণেরা কাজের অভাবে অলস জীবন কাটায়। কেউ রাজনীতির লেজুড়বৃত্তি করে, কেউ গ্যাং সংস্কৃতির দিকে ঝুঁকে পড়ে। কিন্তু আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি—তারা যদি কাজ পায়, তারা কাজ করবে।
কিন্তু কাজ নেই। কারণ, পুঁজি নেই। রাস্তা না থাকার জন্য নয়।
চার লেনের এই সড়কে খরচ ধরা হচ্ছে প্রায় ৪০,০০০ কোটি টাকা।
ধরুন রাস্তার দুই পাশে বেকার তরুণের সংখ্যা ৫ লাখ। তাহলে জনপ্রতি বরাদ্দ হয় ৮ লাখ টাকা।
শুধু কলাপাড়ার জন্য ধরলে জনপ্রতি প্রায় ১ কোটি টাকা!
আমরা এত টাকা চাই না।
আমরা চাই একটা ১,০০০ কোটি টাকার পরীক্ষামূলক ফান্ড।
যেখান থেকে উদ্যোগী তরুণদের আইডিয়ায় অর্থায়ন হবে।
প্রতি আইডিয়ার জন্য ২ থেকে ২০ লাখ টাকা।
প্রতিটি টিমে ৩ থেকে ৩০ জন তরুণ।
তাদের বর্তমান স্কিলকে প্রাধান্য দিয়ে, প্রয়োজনে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের ধারণাকে বাস্তবে রূপ দিতে সাহায্য করা হবে।
বিস্তারিত আলাপ হোক।
তবেই না উন্নয়ন তরুণদের জীবনে আলো আনবে।
৪০ হাজার কোটি টাকার রাস্তা হোক—তাতে কোনো সমস্যা নেই।
কিন্তু তার আগে কলাপাড়ার তরুণদের জন্য ১,০০০ কোটি টাকার কর্মসংস্থান ফান্ড চাই।
এই বাজেটেই চাই। এই মুহূর্তে চাই।
আসুন, আমরা একটু স্বার্থপর হই। নিজেদের জন্য আওয়াজ তুলি।
পল্লবী, ঢাকা