৪ জুন, ২০২৫
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রবর্তিত ২০ টাকার নতুন নোটে “কান্তজিউ মন্দির” এর ছবি সংযোজন নিয়ে সম্প্রতি মুসলমানদের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ একে রাষ্ট্রীয় ঐতিহ্য হিসেবে মেনে নিচ্ছে, কেউ বলছে ‘এইটা সমস্যা না’। আবার কেউ এই অবস্থানকে তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করে বয়কট করতে বলছে।
মন্দির কেবল একটি ভবন নয়, বরং তা একটি শিরক-কেন্দ্র! যেখানে মানুষ আল্লাহ ছাড়া অন্য সত্তাকে সিজদা করে, পূজা দেয়। এটি ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস তাওহীদের সরাসরি বিপরীত।
“إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ”
“নিশ্চয়ই শিরক মহা জুলুম।” (সূরা লুকমান: ১৩)
“وَقَدْ نَزَّلَ عَلَيْكُمْ فِي الْكِتَابِ أَنْ إِذَا سَمِعْتُمْ آيَاتِ اللَّهِ يُكْفَرُ بِهَا… فَلَا تَقْعُدُوا مَعَهُمْ”
“যেখানে আল্লাহর আয়াত অস্বীকার করা হয়… সেখানে তোমরা বসো না।” (সূরা নিসা: ১৪০)
এই নোটে কান্তজিউ মন্দিরের ছবি ব্যবহারের মাধ্যমে শিরকের প্রতীককে গৌরবের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে এবং মুসলিম জনগণকে তা ব্যবহার করতে বাধ্য করা হচ্ছে।
এটি স্পষ্টতই তাওহীদের পরিপন্থী এবং একধরনের শিরকি বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া।
তাহলে সেই শিরকের কেন্দ্রবিন্দু যদি রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈধ ও গৌরবময় করে তুলে ধরা হয়, তবে তা কি আল্লাহর সঙ্গে বিদ্রূপ নয়?
যে মুসলমানরা এ নোটের পক্ষে সাফাই গায়, তাদের সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা স্পষ্ট করা জরুরি:
১. ‘ঐতিহ্য’ ও ‘ইতিহাস’ বলে শিরককে বৈধ করা যাবে না।
ঐতিহ্য যদি শিরকের স্বীকৃতি দেয়, তবে সেই ঐতিহ্য বাতিলযোগ্য।
২. ‘ছবিটি তো পূজা করার জন্য নয়’ — এ যুক্তি ভিত্তিহীন।
শরিয়তের দৃষ্টিতে শুধু পূজা করলেই শিরক হয় না, বরং শিরকের প্রতীককে সম্মানিত করাও গুনাহের অন্তর্ভুক্ত।
ইসলামী আকিদার দৃষ্টিতে এসব একটি ‘মুখরিয মিনাল মিল্লা’ কাজ।
অর্থাৎ এমন কিছু যা একজন মুসলমানকে ইসলামের গণ্ডি থেকে বাইরে ঠেলে দিতে পারে, যদি সে তা সঠিকভাবে না বোঝে এবং সংশোধন না করে।
তাহলে যারা আজ ২০ টাকার নোটে কান্তজিউ মন্দিরের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করছে, তারা কি নিজেদের অজান্তেই মুশরিকদের মানসিকতা ও আদর্শের সঙ্গে একাত্ম হয়ে পড়ছে না?
তাহলে এখন আমাদের করণীয় কী?
১. এই মুদ্রা ব্যবহার না করে, বয়কট করে ন্যূনতম ঘৃণা প্রকাশ করা, অন্তরে বারাআহ রাখা।
২. জনসম্মুখে এর বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া, যেন ভবিষ্যতে এমন কিছু আর না ঘটে।
৩. যারা পক্ষ নিচ্ছে, তাদের সংশোধনের চেষ্টা করা।
৪. তাওহীদভিত্তিক সংস্কৃতি গড়ে তোলা…
সময় ও বাস্তবতা বারবার আমাদের তাওহীদের পথে আহ্বান জানাচ্ছে। কিন্তু আমরা সেই আহ্বানে সাড়া না দিয়ে নিঃশব্দে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছি।
দুঃখের বিষয়, আজ আমাদের অনেক অবুঝ মুসলিম ভাই তাওহীদের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে… জেনে হোক বা না জেনে।
অথচ এখনই সেই সময় তাওহীদের জন্য জেগে ওঠার, শিরককে রাষ্ট্রীয় প্রতীক থেকে মুছে ফেলার এবং উম্মাহকে ঈমানদার নেতৃত্বে ফিরিয়ে আনার।
Muhammad Nechar
Writter, Activist, Independent Journalist