কখনো যে হাতটি ভিক্ষার ঝুলি ছিল, এখন সেটি মেহনতের ঝুলি হয়ে উঠেছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার আবুবক্কর এক সময় ভিক্ষা করে দিন কাটাতেন। তবে এক হৃদয়বান মানুষের সহায়তায় তিনি সেই পথ থেকে সরে এসে আত্মমর্যাদার জীবন বেছে নিয়েছেন। এখন শহরের অলিগলিতে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন পান, চিপস আর চকোলেট।
প্রায় পাঁচ বছর ধরে এইভাবেই ছোট্ট ব্যবসা করে কোনোমতে সংসার চালাচ্ছিলেন। কিন্তু প্রকৃতির করুণ এক আঘাতে আবারও যেন ভেঙে পড়লেন এই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মানুষটি। গেল মে মাসের শেষ সপ্তাহে ঝড়ো হাওয়ায় তার বসতঘর বিধ্বস্ত হয়। ঘর তুলতে কাঠ সংগ্রহ করলেও এখন প্রয়োজন ছাউনির টিন।
আজ শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে কলাপাড়া পৌর শহরের বড় জামে মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে আবুবক্কর সাহায্য প্রার্থনা করেন। সদা হাস্যোজ্জ্বল এই মানুষটির মুখে তখনও হতাশা নয়, বরং ছিল আল্লাহর ওপর অগাধ বিশ্বাস। তিনি জানান, মসজিদের খাদেমের সহায়তায় সহায়তার বাক্স খুলে দেখেন – সেখানে রয়েছে মাত্র ১,০১০ টাকা।
তার ভাষায়, ‘এখনও অনেক দূর বাকি।’ ঘর তুলতে প্রয়োজন অন্তত চার বান্ডিল ঢেউটিন।
আবুবক্করের ডান চোখে একদমই দেখেন না, আর বাম চোখেও দৃষ্টিশক্তি সীমিত। স্ত্রীসহ চার সন্তানকে নিয়ে বলিপাড়া গ্রামে তার বসতঘর পুনর্নির্মাণের স্বপ্ন এখন অনিশ্চয়তার মুখে।
তবুও তাঁর মুখে হাসি, কণ্ঠে আশা। বলেন, ‘আল্লায় মিলাইয়া দেবে।’ এই ভরসা নিয়েই আবার দোকানের বাক্স গলায় ঝুলিয়ে শহরের পথে ছুটে যান কাস্টমারের খোঁজে। ডাক দেন, ‘লাগবে পান?’