নাজমুস সাকিব, কলাপাড়া
শরৎ এলেই বাংলার প্রকৃতি সেজে ওঠে অন্যরকম সাজে। নীল আকাশে ভাসমান তুলোর মতো সাদা মেঘ, মাঠজুড়ে দুলতে থাকা কাশফুল আর ঝলমলে রোদ-সব মিলিয়ে এক অনিন্দ্য সুন্দর দৃশ্য। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা বন্দরের আশপাশের প্রান্তর এখন এমনই মনোমুগ্ধকর রূপে সেজে উঠেছে।
দিগন্তজোড়া কাশবনের সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে আশেপাশের পুকুর ও মসজিদ। দূর থেকে তাকালে মনে হয়, সাদা কাশফুলের সমুদ্রে দাঁড়িয়ে আছে শান্তির প্রতীক সবুজ প্রকৃতি আর মসজিদের মিনার। শরতের হাওয়ায় দুলতে থাকা কাশফুলের সাথে পুকুরের স্বচ্ছ জল মিলিয়ে যেন গড়ে উঠেছে এক স্বপ্নিল পরিবেশ।
পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রশাসনিক ভবনের উঁচু তলা থেকে এ সৌন্দর্য দেখা যায় সবচেয়ে স্পষ্টভাবে। চোখে পড়ে কাশবনের বিস্তীর্ণ শোভা, আন্ধারমানিক নদীর শীতল বাতাসে দোলা, শেরে বাংলা নৌঘাঁটির স্থাপনা, পাশাপাশি পায়রা ও পটুয়াখালী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। একই জায়গা থেকে একসাথে এত বৈচিত্র্যময় দৃশ্য উপভোগ করা নিঃসন্দেহে এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
তবে সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য বন্দর এলাকায় প্রবেশের অনুমতি নেই। নিরাপত্তাজনিত কারণে এখানে কঠোর সিকিউরিটি ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে প্রকৃতিপ্রেমীদের কাশফুলের সৌন্দর্য দেখতে হলে বন্দরের বাইরের অংশ থেকেই উপভোগ করতে হয়।
স্থানীয়দের দাবি, শরতের কাশফুল শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য নয়, এটি বাংলার ঐতিহ্যের প্রতীকও। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই প্রাকৃতিক দৃশ্য অটুট রাখতে হলে দখল, দূষণ ও নির্বিচারে জমি ভরাট বন্ধ করা জরুরি। নইলে একদিন হয়তো হারিয়ে যাবে এ অপরূপ সৌন্দর্য।
বাংলার শরতের প্রতীক কাশফুল তাই শুধু ঋতুর বার্তাবাহক নয়, বরং প্রকৃতি ও মানুষের সহাবস্থানের এক জীবন্ত সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে পায়রা বন্দরের আঙিনায়।