মোঃ আবদুল্লাহ আল নোমান,কুয়াকাটা:
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এলাকায় আবারও শুরু হয়েছে দখলবাজি। স্থানীয় রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় সৈকত লাগোয়া চৌরাস্তা এবং এর আশেপাশে প্রায় ১০০টি ছোট-বড় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রতিটি স্থাপনা দোকান করার জন্য ৫০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকায় হস্তান্তর করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সৈকতের বেলাভূমিতেও অবাধে ছাতা-বেঞ্চি বসিয়ে পর্যটকদের হাঁটার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের মতে, কুয়াকাটা সৈকত এলাকা বর্তমানে সরকারি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে এবং সেখানে এক অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, চৌরাস্তার পূর্ব দিকে বেড়িবাঁধের বাইরে ১২টি এবং চৌরাস্তা থেকে বীচের দিকে ডানে-বামে ১৫টি অবৈধ স্থাপনা তৈরি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দোকানি জানিয়েছেন, রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের মাধ্যমে এসব স্থাপনা ভাড়ায় দেওয়া হচ্ছে।
একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, একটি প্রভাবশালী মহল রাজনৈতিক পদ ব্যবহার করে এসব স্থাপনা নির্মাণ করছেন। চৌরাস্তা থেকে পশ্চিম দিকে রাস্তার পাশেও অসংখ্য ছোট ছোট অবৈধ স্থাপনা তোলা হয়েছে, যা পর্যটন এলাকার সৌন্দর্য নষ্ট করছে এবং এলাকাটিকে বস্তির মতো দেখাচ্ছে। গত তিন মাস ধরে এই দখলবাজি চলছে এবং রাস্তার অনেকাংশও দখলের শিকার হয়েছে, ফলে পর্যটকদের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বিগত সরকারের সময় বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি ও জেলা প্রশাসন এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছিল। তবে নতুন করে আবার স্থাপনা তোলার কারণে পর্যটন এলাকার সৌন্দর্যহানি ঘটছে এবং সরকারি জমি বেদখল হচ্ছে। গত অক্টোবর-নভেম্বর মাসে উচ্ছেদ অভিযানকালে দখলদার চক্র হামলার ঘটনাও ঘটিয়েছিল, এরপর থেকে প্রশাসনের অভিযান শিথিল হয়ে যায়।
পর্যটক এবং স্থানীয় পর্যটনবান্ধব মানুষজন পর্যটন এলাকার সৌন্দর্য রক্ষা এবং পর্যটকদের সুবিধার জন্য দ্রুত এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, পর্যটকদের স্বস্তিদায়ক পরিবেশ ও সৌন্দর্য রক্ষায় শীঘ্রই অবৈধ স্থাপনা অপসারণের কার্যক্রম শুরু করা হবে।