আলহামদুলিল্লাহ। আমরা কৃতজ্ঞ মহান আল্লাহর নিকট, যিনি আমাদের ঈমান ও ইসলাম দান করেছেন। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি, যিনি জীবন চলার সঠিক পথ নির্দেশ করেছেন।
আজকের মুসলিম সমাজের এক গভীর সংকট হলো —
অনেক মুসলমান গান-বাজনাকে স্পষ্ট হারাম জেনেও তা শুনে, এবং এ কাজকে কোনো গুরুতর অপরাধ মনে করে না।
এমনকি কিছু মুসলিম সরাসরি গান-বাজনাকে হালাল মনে করেও চর্চা করে, যদিও সংখ্যায় তারা কম।
কিন্তু বড় দুঃখের বিষয় হলো, যারা হারাম বুঝেও গান শোনে, তাদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:
وَمِنَ النَّاسِ مَنۡ يَشۡتَرِي لَهۡوَ ٱلۡحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ
“মানুষের মধ্যে কেউ এমনও আছে, যারা অসার কথাবার্তা (গান-বাজনা) ক্রয় করে, যাতে তারা অজ্ঞতার মাধ্যমে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করে।”
— (সূরা লুকমান: ৬)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সতর্ক করেছেন:
“আমার উম্মতের মধ্যে এমন লোক আসবে যারা ব্যভিচার, রেশমের কাপড়, মদ্যপান এবং বাদ্যযন্ত্রকে হালাল মনে করবে।”
— (সহীহ বুখারী, হাদীস: ৫৫৯০)
হারামকে হারাম জেনে গুনাহ করা — এটি ইসলামে খুবই বিপজ্জনক একটি অবস্থান।
কারণ:
১. হারাম জেনেও গুনাহ করার মাধ্যমে অন্তর কঠিন হয়ে যায়।
২. গুনাহকে তুচ্ছ মনে করার প্রবণতা জন্ম নেয়।
৩. আল্লাহর রহমত থেকে মানুষ ধীরে ধীরে দূরে সরে যায়।
৪. নিয়মিত গুনাহ করতে করতে এমন অবস্থা হতে পারে যে, তওবার তাওফীকও ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
৫. শেষ পর্যন্ত ঈমান দুর্বল হয়ে মৃত্যুর সময়ে বড় বিপদের সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন:
“যখন কোনো বান্দা গুনাহ করে, তখন তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে। যদি সে তওবা করে, তাহলে তা মুছে যায়। আর যদি সে গুনাহ বাড়িয়ে যায়, তবে কালো দাগও বাড়তে থাকে, যতক্ষণ না তা পুরো হৃদয় ঢেকে ফেলে।”
— (মুসনাদে আহমাদ, তিরমিজি)
কেন হারাম জেনেও মানুষ গান শোনে?
১. নফসের দুর্বলতা।
২. সমাজ ও পরিবেশের চাপ।
৩. গুনাহকে গুরুত্বহীন মনে করা।
৪. আল্লাহর ভয় কমে যাওয়া।
তাহলে কিভাবে এর থেকে বেরিয়ে আসব? করনীয় কি?
১. গুনাহের ভয়াবহতা অনুভব করা।
২. আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে খাঁটি তওবা করা।
৩. হারাম থেকে বাঁচার জন্য পরিবেশ পরিবর্তন করা।
৪. ঈমানী পরিবেশ ও নেক সঙ্গীর সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলা।
৫. কুরআন, হাদীস, জিকির ও দ্বীনি আলোচনার মাধ্যমে অন্তরকে জীবন্ত রাখা।
অতএব,
নামাজ, রোজা পালন করে গুনাহের সাথে আপস করা কোনো মু’মিনের কাজ হতে পারে না।
হারাম জেনেও গান-বাজনা শোনা মানে আল্লাহর নাফরমানিতে ইচ্ছাকৃতভাবে জড়িয়ে থাকা।
এ অভ্যাস অব্যাহত থাকলে ঈমান ধ্বংসের আশঙ্কা প্রবল।
তাই সময় থাকতে গুনাহ থেকে ফিরে আসতে হবে, অনুতপ্ত তওবা করতে হবে এবং আল্লাহর রহমতের ছায়ায় ফিরে যেতে হবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে গুনাহ ছেড়ে খাঁটি ঈমানদার বানানোর তাওফীক দান করুন। আমীন।
Muhammad Nechar
আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুক 😭😭
আল্লাহ্ লেখক সহো দুনিয়ার আপনার সকল বান্দাকে হিদায়াত দান করুন🥺
Thik…